আন্তর্জাতিক বাজারে গতকাল স্বর্ণের দাম কিছুটা কমেছে। তবে এখনো প্রতি আউন্স স্বর্ণ ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০০ ডলারের আশপাশে দাম বিক্রি হচ্ছে। আগামী সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল রিজার্ভ (ফের) সুদহার কমাবে—বাজারে প্রচলিত এমন প্রত্যাশায় আগের দিন স্বর্ণের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে। পরে বাড়তি মুনাফার আশায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বর্ণ বিক্রির প্রবণতা দেখা দেয়। এতে বিক্রয় চাপ বেড়ে মূল্য কমে যায় ধাতুটির।
যুক্তরাষ্ট্রের স্পট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণের দাম দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। এতে প্রতি আউন্সের দাম দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫০৩ ডলার ১০ সেন্ট। অন্যদিকে ফিউচার মার্কেটে দশমিক ২ শতাংশ দাম বেড়ে ২ হাজার ৫৪১ ডলার ৫০ সেন্টে উন্নীত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ সুদহার কমাতে পারে। এ আশাবাদ সামনে রেখে শুক্রবার স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে সাম্প্রতিককালের সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০৯ ডলার ৬৫ সেন্টে পৌঁছায়। এছাড়া চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যবান ধাতুটির ক্রয় বাড়িয়ে দিয়েছে। এটিও দাম বাড়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত স্বর্ণের দাম ২০ শতাংশ বেড়েছে।
কেসিএম ট্রেডের প্রধান বাজার বিশ্লেষক টিম ওয়াটারার বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৫০০ ডলারের মনস্তাত্ত্বিক স্তরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে তা সে স্তরে পৌঁছেছে। অবশেষে সে স্তরে পৌঁছতে উত্তীর্ণ হয়েছে। এখন আমরা কিছু স্বাভাবিক মুনাফা আহরণের ঘটনা দেখছি।’
এদিকে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রি, মূল্যস্ফীতি ও কর্মসংস্থানসংক্রান্ত পৃথক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে প্রত্যাশার চেয়ে কম কর্মসংস্থান তৈরির কথা জানা গেলেও মূল্যস্ফীতি ও খুচরা বিক্রির প্রতিবেদন মোটামুটি আশাব্যঞ্জক। ফলে মার্কিন ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেশটির অর্থনীতি নিয়ে আস্থা বেড়েছে। প্রতিবেদনগুলোর ওপর ভিত্তি করে তারা ধারণা করছেন, সেপ্টেম্বরে সুদহার কমানো হবে। তবে কতটা কমানো হবে, এখন সেদিকে নজর রাখছেন তারা। সিএমই ফেডওয়াচটুলের মূল্যায়ন অনুযায়ী, সুদহার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানোর সম্ভাবনা ৭৫ দশমিক ৫ শতাংশ। ওয়াটারার বলেন, ‘বিষয়টি কোন দিকে যাচ্ছে, তা বুঝতে ব্যবসায়ীরা নিশ্চিতভাবে ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যের দিকে নজর রাখবেন।’
এছাড়া বুধবার অনুষ্ঠেয় ফেডারেল রিজার্ভের জুলাইয়ের নীতিনির্ধারণী বৈঠকের দিকেও নজর থাকবে। ক্যাপিটাল ডটকমের আর্থিক বাজার বিশ্লেষক কাইল রোডা বলেন, ‘স্থবির মার্কিন অর্থনীতি, আসন্ন সুদহার কর্তন ডলার অবনমন, অব্যাহত ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় ঝুঁকি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোয় ক্রমবর্ধমান চাহিদা দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের দাম বাড়ানোয় ভূমিকা রাখবে।’
সম্প্রতি কিছু চীনা ব্যাংক নতুন করে স্বর্ণ আমদানির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোটা অনুমোদন পেয়েছে। ফলে রেকর্ড দাম সত্ত্বেও স্বর্ণের চাহিদা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে স্পট মার্কেটে প্রতি আউন্স রুপার দাম দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ২৯ ডলার ১১ সেন্টে পৌঁছেছে। প্লাটিনামের দাম ৯৫৪ ডলার ৬৫ সেন্টে স্থির রয়েছে। তবে প্যালাডিয়ামের দাম দশমিক ৭ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ৯৪৪ ডলার ৪৩ সেন্টে উন্নীত হয়েছে। (খবরঃ রয়টার্স)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন