ফ্রান্সের তিন অঞ্চলে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। একই কারণে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইডিএফ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সীমিত করেছে। তবে এ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাজনিত কোনো ঝুঁকি নেই বলেও জানানো হয়েছে।
ইডিএফ বলছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি চুল্লি আক্রান্ত হয়েছে। তবে এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে চিন্তিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি।
লিয়ন শহরের কাছে বুজে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি চুল্লি ১২ আগস্ট থেকে বন্ধ। শহরটির কাছে আরেক কেন্দ্র সেন্ট-আলবানের উৎপাদন ১১ আগস্ট থেকে সীমিত করা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ত্রিকাস্তিন কেন্দ্রে একই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তাপমাত্রাসংক্রান্ত জটিলতা ইডিএফের জন্য নতুন নয়। এর আগেও অনেকবার এ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। যেমনটা গত মাসে প্রকাশিত তাদের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মপরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই কর্মপরিকল্পনায় তাপপ্রবাহকে ‘তীব্র ঝুঁকি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে যেসব উৎপাদন কাজে পানির প্রয়োজন সেসব ক্ষেত্রের বার্ষিক ক্ষতির হিস্যা ২০৫০ সালে ১ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়ানোর পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির এ হিস্যার পরিমাণ শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর থেকে সহজেই বোঝা যায় তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুল্লি ভবিষ্যতেও আক্রান্ত হতে পারে। কারণ চুল্লির জন্য প্রচুর পরিমাণে পানি প্রয়োজন। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পানি বাষ্পে পরিণত করে টারবাইন ঘোরানো হয়। পাশাপাশি জলাশয় বা নদী থেকে নেয়া পানির প্রবাহ চুল্লির নির্দিষ্ট অংশ ঠাণ্ডা করার কাজে ব্যবহার হয়, যা আবার জলাশয় বা নদীতে ফেলা হয়। এ পানি তেজস্ক্রিয় কোনো পদার্থের সংস্পর্শে আসে না। এ প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ তাপমাত্রা উৎপন্ন হয়।
ফরাসি আইনে জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য মাত্রাতিরিক্ত গরম পানি জলাশয় বা নদীতে ফেলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ আইনের প্রতি সম্মান রেখে কিছু ক্ষেত্রে উৎপাদন সীমিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইডিএফ। তারা বলেছে, ফরাসি পারমাণবিক সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ (এএসএন) কেন্দ্রভেদে ঠিক কতটা পানি নিঃসরণ করতে পারবে তা নির্ধারণ করে দিয়েছে। (খবরঃ ইউরো নিউজ)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন