কৃত্রিম হীরার দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎপাদক দেশ ভারত। দেশটিতে সম্প্রতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এ শিল্প। গত এক বছরে দাম কমেছে প্রায় ৬৫ শতাংশ। ফলে বেশির ভাগ কোম্পানিকেই লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ লোকসান থেকে বাঁচতে সরকারি নীতিগত পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে জানিয়েছে গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ট্রেড অ্যান্ড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই)।
প্রতিবেদনে জিটিআরআই জানায়, অভ্যন্তরীণভাবে কৃত্রিম হীরা শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে ভারত সরকারকে নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ পদক্ষেপের মধ্যে থাকতে পারে লেবেলিংয়ের জন্য স্পষ্ট নির্দেশিকা জারি ও সস্তা আমদানি সীমিত করার লক্ষ্যে মান নিয়ন্ত্রণের আদেশ প্রত্যয়ন ও আরোপ।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ভারতের কৃত্রিম হীরা শিল্প বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। গত এক বছরে এর দাম ৬৫ শতাংশ কমে ক্যারেটপ্রতি ৬০ হাজার থেকে ২০ হাজার রুপিতে নেমে এসেছে। হীরার এ দরপতনের মূল কারণ চাহিদার তুলনায় বেশি উৎপাদন, অতিরিক্ত আমদানি ও শিল্পটিতে নিয়ন্ত্রণের অভাব। ফলে ভোক্তাদের আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ শিল্পকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য জরুরি সংশোধনমূলক পদক্ষেপ প্রয়োজন। এছাড়া ভারতকে আমদানির গুণমান পরীক্ষা করার জন্য একটি মান নিয়ন্ত্রণ আদেশ জারি করার কথা বিবেচনা করা উচিত। উৎপাদন প্রক্রিয়া উন্নত ও খরচ কমানোর পাশাপাশি কৃত্রিম হীরার গুণমান বাড়াতে গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ করাও গুরুত্বপূর্ণ।
জিটিআরআই প্রতিবেদনে আরো জানায়, ভারতে কৃত্রিম হীরা শিল্পের বেশির ভাগই সুরাত ও মুম্বাইয়ে অবস্থিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ শিল্পের উল্লেখযোগ্য প্রসার হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ দুই অঞ্চলে ২০০ কোটি মূল্যের হীরা তৈরি করা হয়েছে।
বিশ্বে কৃত্রিম হীরা শিল্পে গুরত্বপূর্ণ হিস্যা রয়েছে ভারতের। দেশটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মতো প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোয় হীরা রফতানি করে রাজস্ব আয় করে। ২০২৪ অর্থবছরে ভারত ১৩৮ কোটি ডলার মূল্যের কৃত্রিম হীরা (কাটা ও মসৃণ) আমদানি করেছে। একই সময় দেশটি ১ হাজার ৩৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার মূল্যের হীরা রফতানি করে।
এদিকে বিশ্বব্যাপী এ হীরার দাম গত বছর নিম্নমুখী ছিল। জিটিআরআই জানায়, গত বছর ল্যাবে উৎপাদিত হীরার বিশ্বব্যাপী বাজার মূল্য ছিল আনুমানিক ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। ২০৩০ সালের মধ্যে এ বাজারমূল্য ৫ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া বিশ্বে ২০২৪ অর্থবছরে আনুমানিক মোট ৪ হাজার কোটি ডলারের হীরা উৎপাদন করা হয়েছে।
অন্যদিকে গত বছর কৃত্রিম হীরার বৈশ্বিক মূল্য ৩০-৬০ শতাংশ কমেছে। অতিরিক্ত সরবরাহ ও প্রতিযোগিতা বাড়ানোর জন্য এ মূল্যহ্রাস অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। (খবর: দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন