চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) প্রত্যাশা অনুযায়ী আয় না করলেও মুনাফা বেড়েছে ই-কমার্স ও প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের। সম্প্রতি আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর কোম্পানির শেয়ারদরে ভাটা দেখা যায়।
সিয়াটলভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার, যা বাজার বিশ্লেষণ সংস্থা ফ্যাক্টসেটের পূর্বাভাস করা ১ হাজার ৯৯ কোটি ডলারের চেয়ে বেশি। এছাড়া ২০২৩ সালের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে অ্যামাজনের মুনাফা হয়েছিল ৬৭০ কোটি ডলার।
প্রতিবেদন অনুসারে, শেয়ারপ্রতি ১ ডলার ৩ সেন্টের পূর্বাভাসের বিপরীতে অ্যামাজন মুনাফা করেছে ১ ডলার ২৬ সেন্ট। একই সময়ে কোম্পানির আয় ১০ শতাংশ বেড়ে ১৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার হয়েছে। তবে তা প্রত্যাশিত ১৪ হাজার ৮৬৭ কোটি ডলারের চেয়ে কিছুটা কম।
এদিকে তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ১৫ হাজার ৪০০ থেকে ১৫ হাজার ৮৫০ কোটি ডলারের মধ্যে আয়ের পূর্বাভাস দিয়েছে অ্যামাজন। তবে বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস অনুসারে, চলতি প্রান্তিকে ই-কমার্স জায়ান্টটির আয় ১৫ হাজার ৮২২ কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে।
কভিড-১৯ মহামারীর সময়ে প্রচলিত দোকানের বদলে ক্রেতারা অনলাইন শপিংয়ে বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। তখন বাড়তি চাহিদা মেটাতে ব্যয় ও লোকবল বাড়াতে হয়েছিল অ্যামাজনকে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য ব্যবসায় চাপ বাড়তে থাকে। বাড়তি ব্যয়ের প্রভাবও দেখা দিতে শুরু করে। তখন খরচ কমাতে অলাভজনক ব্যবসার ২৭ হাজারেরও বেশি কর্মী ছাঁটাই করে প্রতিষ্ঠানটি।
অ্যামাজনের আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেসের আয় ১৯ শতাংশ বেড়েছে। অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যান্ডি জ্যাসি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছি। তবে ওয়েব পরিষেবায় যে অগ্রগতি হয়েছে তা সবচেয়ে বেশি।’
এপ্রিলে তিনি বলেছিলেন, ওয়েব পরিষেবা বার্ষিক ১০ হাজার কোটি ডলার আয়ের গতিতে রয়েছে। তবে এ খাতের জন্য অ্যামাজন চলতি বছরে খরচ বাড়াবে বলে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) ব্রায়ান ওলসাভস্কি বলেন, ‘বছরের প্রথমার্ধে ৩ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি খরচ হয়েছে। এর বেশির ভাগ অংশই ছিল ওয়েব পরিষেবা অবকাঠামো উন্নয়নে খরচ। দ্বিতীয়ার্ধে তা আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।’
অন্য প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের মতো ডাটা সেন্টার, চিপ ও এআই পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে অ্যামাজন। সৌদি আরব, মেক্সিকো ও মিসিসিপিতে অতিরিক্ত অবকাঠামো নির্মাণে হাজার হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে কোম্পানিটি। এর মধ্যে দুটি ডাটা সেন্টারও রয়েছে।
এদিকে অ্যামাজনের প্রধান ব্যবসা ই-কমার্স খাতে আয় বেড়েছে ৫ শতাংশ। তবে সাম্প্রতিক প্রান্তিকগুলোর তুলনায় এক্ষেত্রে মন্থর গতি দেখা গেছে। অন্যদিকে বিজ্ঞাপন ব্যবসায় বিক্রি বেড়েছে ২০ শতাংশ। (সূত্র: এপি)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন