ভিয়েতনামে চলতি সপ্তাহে চালের রফতানি মূল্য কমেছে। গত এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমেছে পণ্যটির দাম। গতকাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিজনেস রেকর্ডার।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামে ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের টনপ্রতি মূল্য ছিল ৫৫০-৫৬০ ডলার, গত সপ্তাহে যা ছিল ৫৬৫-৫৭০ ডলার।
এ বিষয়ে ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটিভিত্তিক এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘দেশটির মেকং ডেল্টায় অববাহিকায় বৃষ্টিপাতের কারণে চলতি মৌসুমের ফসল কাটায় ব্যাঘাত ঘটেছে। এ কারণে দেশটিতে সম্প্রতি ব্যবসায়িক কার্যকলাপ আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে, যা চলতি সপ্তাহে চালের রফতানি মূল্য কমার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।’
তবে আগামী সপ্তাহে দেশটিতে চালের মূল্য আবার বাড়তে পারে। কারণ রফতানিকারকরা আশা করছেন, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় ক্রয় সংস্থা বুলোগ আগামী মাসের শুরুতে ৩ লাখ ২০ হাজার টন চাল ক্রয় করতে পারে। এছাড়া আগামী মাসে মেকং ডেল্টায় চলতি মৌসুমের ফসল সংগ্রহ শেষ হবে। তাই সে সময় চালের প্রয়োজনীয় সরবরাহও থাকবে।
এদিকে বিশ্বে চালের শীর্ষ রফতানিকারক দেশ ভারতে এর চাহিদা আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। এ কারণে চলতি সপ্তাহে দেশটিতে চালের রফতানি মূল্যও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। যদিও প্রয়োজনীয় সরবরাহ ও বপন বৃদ্ধির কারণে দেশটিতে চালের দাম চলতি সপ্তাহে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি।
ভারতে চলতি সপ্তাহে ৫ শতাংশ খুদযুক্ত সিদ্ধ চালের টনপ্রতি মূল্য ছিল ৫৪০-৫৪৭ ডলার, গত সপ্তাহে যা ছিল ৫৩৭-৫৪৩ ডলার।
এ বিষয়ে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশের কাকিনাড়ভিত্তিক এক রফতানিকারক বলেন, ‘ভারতীয় চালের চাহিদা আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। পরিবহন ব্যয় কমে যাওয়ায় আফ্রিকার আমদানিকারকদের ভারতীয় চালের ক্রয়প্রবণতা বাড়ছে।’ এছাড়া সূত্রের দেয়া তথ্যমতে, ভারত বাসমতী চালের ন্যূনতম রফতানি মূল্য (এমইপি) কমাতে পারে। এর আগে দেশটিতে বাসমতী চালের এমইপি ছিল টনপ্রতি ৯৫০ ডলার। বর্তমানে তা কমিয়ে ৮০০-৮৫০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়া হতে পারে। পাশাপাশি সিদ্ধ চাল রফতানিতে ২০ শতাংশ শুল্কের পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট শুল্ক নির্ধারণ করে দিতে পারে দেশটি।
বাসমতী চাল রফতানিতে বিশ্বে শীর্ষ দেশ ভারত ও পাকিস্তান। এর মধ্যে ভারত প্রতি বছর ৪০ লাখ টনের মতো বাসমতী চাল ইরাক, ইরান, ইয়েমেন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করে থাকে।
ভারতের ফুড করপোরেশনের দেয়া তথ্যমতে, দেশটিতে ১ জুলাই চালের রাষ্ট্রীয় মজুদ পৌঁছায় ৪ কোটি ৮৫ লাখ ১০ হাজার টনে। ভারতে চালের এমন মজুদ চলতি মাসে সর্বোচ্চ ও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেশি। এছাড়া চলতি শস্য উৎপাদন মৌসুমে ভারতে মোট ১ কোটি ১৬ লাখ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে থাইল্যান্ডেও চলতি সপ্তাহে চালের রফতানি মূল্য কিছুটা বেড়েছে। টনপ্রতি মূল্য পৌঁছেছে ৫৭০-৫৮০ ডলারে, গত সপ্তাহে যা ছিল টনপ্রতি ৫৭০-৫৭৫ ডলার। (সূত্র: বিজনেস রেকর্ডার)
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন