গত ১৪ বছরে সরকারের ব্যয় খতিয়ে দেখবেন ব্রিটেনের নতুন অর্থমন্ত্রী – The Finance BD
 ঢাকা     বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৯ পূর্বাহ্ন

গত ১৪ বছরে সরকারের ব্যয় খতিয়ে দেখবেন ব্রিটেনের নতুন অর্থমন্ত্রী

  • ১০/০৭/২০২৪

বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেছেন যুক্তরাজ্যের নতুন অর্থমন্ত্রী র‌্যাচেল রিভস। তিনি জানিয়েছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর কোনো সরকার এত খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে যাত্রা শুরু করেনি। গত ১৪ বছর দেশটির রক্ষণশীল সরকার কোন খাতে কত ব্যয় করেছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন রাজস্ব বিভাগকে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর সোমবার র‌্ল রিভস প্রথম বড় কোনো অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে এ বছর তাঁকে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং তিনি তার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রবৃদ্ধির গতি বাড়াতে তিনি একই সঙ্গে গৃহায়ণ ও বায়ুকলের উন্নতির অর্গল খুলে দিতে চান।
ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৪ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে বিশৃঙ্খলা ও অর্থনীতিতে দায়িত্বহীনতা দেখা গেছে। সে জন্য গত সপ্তাহান্তে তিনি রাজস্ব বিভাগকে গত ১৪ বছরের ব্যয়ের খতিয়ান করার নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থনীতির কোথায় কোথায় চ্যালেঞ্জ আছে, তা বোঝার জন্য এটা জরুরি বলে তিনি মনে করেন।
চলতি মাসেই ব্রিটিশ পার্লামেন্ট বিদায়ী ঋষি সুনাক সরকারের ব্যয়ের খতিয়ান পেশ করা হবে বলে জানা গেছে।
শরৎকালীন বাজেটে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে উল্লেখ করেছেন র‌্যচেল রিভস। স্পষ্টতই তিনি ব্যয় সংকোচন বা করহার বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন। চলতি মাসেই যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্যরা গ্রীষ্মকালীন অবকাশে যাবেন, তার আগেই শরৎকালীন বাজেট ঘোষণার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে সরকার গঠন করা—এই কথাটা র‌্যাচেল রিভস আগেও বলেছেন। সোমবারের বক্তৃতায় তিনি আবারও বলেন, সরকার গঠনের পরবর্তী তিন দিনের যে ঘটনাপ্রবাহ, তাতে তিনি এত দিন যা বলেছেন, তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
কনজারভেটিভ পার্টি অবশ্য আগেই থেকে বলে আসছে, লেবার পার্টি ক্ষমতায় এলে করহার বাড়ানো হবে। এখন তারা বলছে, এই ব্যয় পর্যালোচনার মাধ্যমে সরকার কর বাড়ানোর যৌক্তিকতা খুঁজছে।
কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক এক মন্ত্রী বলেছেন, সুনাক সরকার কোন খাতে কত ব্যয় করেছে, তার হিসাব তো আছেই। অফিস ফর বাজেট রেসপনসিবিলিটি অথবা সংসদের কার্যবিবরণীতে সেই হিসাব পাওয়া যায়। সেই মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এটা লেবার পার্টির অজুহাতমাত্র। আমরা তো ঠিক এ কথাই বলেছি; কর বাড়ানোর জন্য তারা এসব কথাই বলবে।’
র‌্যাচেল রিভসের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র ফিন্যান্সিয়াল টাইমসেকে জানিয়েছে, এই ব্যয় পর্যালোচনা ঠিক বাজেট বা ব্যয়ের সামগ্রিক পর্যালোচনা নয়; বরং এটা অর্থনীতির চালচিত্র বোঝার জন্য করা হচ্ছে।
নির্বাচনের ইশতেহারে লেবার পার্টি ১৫ লাখ বাড়ি ও জ্বালানি অবকাঠামো নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিল। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে পরিকল্পনা-ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। প্রক্রিয়ায় গতি আনার সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক লালফিতার দৌরাত্ম্যে যেন বিনিয়োগ আটকে না যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান তিনি। যুক্তরাজ্যকে বিনিয়োগের নিরাপদ জায়গা হিসেবে গড়ে তুলতে চান রিভস।
অর্থনীতিতে গতি আনার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বড় বড় শহরের পাশে যে সবুজ বেষ্টনী আছে, তার পর্যালোচনা করতে চান রিভস। এসব এলাকার নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়া যার লক্ষ্য।
এ ছাড়া পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষপাতী নতুন অর্থমন্ত্রী। এত দিন যেভাবে হয়েছে সেভাবে চলবে না বলেই তাঁর মত। এত দিন কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রসঙ্গ এলেই সরকার চোখ বন্ধ করে তা বাতিল করে দিত, সেই ধারা থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলেছেন রিভস।
স্থানীয় সরকার পর্যায়ে গৃহ নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের যে কথা নতুন সরকার বলেছে, তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন দেশটির হোম বিল্ডার্স ফেডারেশনের প্রধান নির্বাহী নিল জেফারসন। তবে সে জন্য তিনি কার্যকর পরিকল্পনার গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, নির্মাণকাজে গতি আনতে স্থানীয় সরকার পর্যায়ে দায়িত্ব বণ্টন করতে হবে।
র‌্যাচেল রিভস আরও বলেছেন, তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সাবেক গভর্নর মার্ক কারনির কাছ থেকে নতুন শিল্প খাতে প্রাণ সঞ্চারের লক্ষ্যে ৭৩০ কোটি পাউন্ড ব্যয়ের পরিকল্পনা পেয়েছেন। এটাও লেবার পার্টির নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল।
পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা শিগগিরই ঘোষণা করা হবে বলে জানার র‌্যাচেল রিভস।
Source: ফিন্যান্সিয়াল টাইমস

 

ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি

ট্যাগঃ

মন্তব্য করুন

Leave a Reply




Contact Us