আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি প্রবেশকালে তিউনিশিয়ার জলসীমায় মারা যাওয়া ৮ বাংলাদেশির মরদেহ দেশে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে তিউনিসিয়া থেকে উড়োজাহাজে করে মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনা হয়। বিমানবন্দরে মরদেহ নেওয়ার অপেক্ষায় থাকা নিহত ব্যক্তিদের স্বজনরা বলছেন, ছোট একটি নৌকায় ৫২ জনকে নিয়েছিল দালালেরা। যে আটজন মারা গেছেন, তাদের বেঁধে নৌকার পাটাতনের নিচে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারা অক্সিজেন সংকটের কারণে পাটাতন থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু দালালেরা তাদের মারধর করে আবার সেখানে পাঠান। এভাবে নির্যাতন ও অক্সিজেন সংকটের কারণেই তারা মারা গেছেন।
এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার তৌহিদুল ইসলাম। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেন তিনি। নিহত মো. কায়সারের ভগ্নিপতি শাওন ফকির বলেন, লিবিয়া থেকে কায়সারকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার জন্য দালালেরা আট লাখ টাকা নিয়েছিল। বলেছিল বড় নৌকায় করে ইতালি পৌঁছে দেবে।
তিনি বলেন, ওই নৌকায় সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ জন উঠতে পারে। সেখানে ৩৪ বাংলাদেশিসহ ৫২ জন মানুষ ছিলেন। বেশি লোক হওয়ার কারণে কায়সারসহ আটজনকে নৌকার পাটাতনের নিচে রাখা হয়। শাওন ফকির আরও বলেন, কায়সারের ছোট দুটি মেয়ে রয়েছে। বাবাকে ছাড়া কীভাবে মেয়ে দুটি মানুষ হবে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি অভিবাসী দল নৌকায় করে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় লিবিয়ার জোয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। যাত্রাপথে নৌকাটি তিউনিসিয়া উপকূলে গেলে মধ্য রাত সাড়ে চারটার দিকে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। নৌকাটিতে মোট ৫৩ জনের মধ্যে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালক ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর তাদের মধ্যে ৪৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে পাকিস্তানের ৮ জন, সিরিয়ার ৫ জন, মিসরের ৩ জন ও নৌকা চালক রয়েছেন।
ওই ঘটনায় নৌকায় থাকা ৯ জন যাত্রী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি। নিহত অপর ব্যক্তি পাকিস্তানের নাগরিক।
নিহত বাংলাদেশিরা হলেন- মামুন শেখ, সজল বৈরাগী, নয়ন বিশ্বাস, রিফাত শেখ, সজীব কাজী, ইমরুল কায়েস, মো. কায়সার ও রাসেল শেখ। তাদের মধ্যে পাঁচজনের বাড়ি মাদারীপুরে ও তিনজনের বাড়ি গোপালগঞ্জে।
ক্যাটাগরিঃ আন্তর্জাতিক
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন