অর্থনীতি ডেস্ক: খেলাপি ঋণসহ দেশের ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশের পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
একইসঙ্গে ব্যাংকগুলোর আর্থিক ব্যবস্থার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের করা পরিদর্শনের প্রতিবেদন গ্রাহকদের জন্য উন্মুক্ত করতেও বলেছে বহুপাক্ষিক ঋণদাতা সংস্থাটি।
রোববার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এই পরমার্শ দিয়েছে আইএমএফের প্রতিনিধিদল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ঋণ অনিয়মের কারণে অধিকাংশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েই যাচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকটি ব্যাংকের ব্যাপক তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। এসব ব্যাংকের গ্রাহকদের আমানত ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে বলে মনে করে আইএমএফ।
এর ফলে গ্রাহকরা নিজেরাই ব্যাংকের অবস্থান বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন গ্রাহকদের জন্য প্রকাশ করার পরামর্শ দিয়েছে বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি।
আইএমএফের পরামর্শে এর আগে ২০২২ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের ব্যাংক খাতের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের তথ্য প্রকাশ করেছে। ২০২২ সালের শেষ নাগাদ দেশের ব্যাংকিং খাতের অভ্যন্তরে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণের যে অংক প্রকাশ করছে তার তুলনায় এ ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ দ্বিগুণের বেশি। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা বলে জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সভায় আইএমএফের প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন অব্যাহত আছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছে। আর পরিদর্শন প্রতিবেদনগুলো গ্রাহকদের জন্য প্রকাশ করা হয় কি না, সে বিষয়েও ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের তথ্য প্রকাশ করছি। এর বাইরে আরও কিছু তথ্য তারা প্রকাশ করার পরামর্শ দিয়েছে।’
একই দিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অপর একটি বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে ব্যাংক একীভূতকরণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছে আইএমএফ। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিরা ব্যাংক একীভূতকরণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিমধ্যে যেসব নীতিমালা জারি করেছে, সেসব তথ্য প্রতিনিধিদলের কাছে উপস্থাপন করেন। একইসঙ্গে দেশের ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা বাড়াতে একীভূতকরণের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশকে দেওয়া ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে বিভিন্ন শর্ত পূরণের কাজ পর্যালোচনা করতে গত ২৩ এপ্রিল আইএমএফের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফরে এসেছে। সূত্র: টিবিএস
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন