একজন উপপরিচালক, একজন অফিসার ও ৫৫ জন সহকারী পরিচালকসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের মোট ৫৭ জন কর্মকর্তা চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়। চাকরি ছেড়ে যাওয়া এসব কর্মকর্তা বেশির ভাগই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়া খুলনা ও বরিশাল অফিসে ৩ জন করে, সিলেট অফিসে ২ জন, মতিঝিল, চট্টগ্রাম ও রংপুর অফিসে একজন করে কর্মরত ছিলেন।
এসব কর্মকর্তার চাকরি ছাড়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসনের ঘাটতিতে হতাশা, চাকরির সুযোগ-সুবিধা কমে আসার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, ২০১৮ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর অ্যাকাডেমি রেজাল্টের ভিত্তিতে চারটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট পেতেন যোগদানকারীরা। কিন্তু ২০১৯ সাল থেকে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালের পূর্বে তিন বছর পূর্ণ হলে পদ খালি থাকা সাপেক্ষে পরবর্তী ধাপে পদোন্নতির যোগ্য হতেন কর্মকর্তারা। বর্তমানে পদ খালি থাকলেও চাকরির বয়স পাঁচ বছর না হলে পদোন্নতি দেওয়া হয় না। পূর্বের ৯ মাসের ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ এখন এক থেকে তিন মাসে নামিয়ে আনা হয়েছে। ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণে ৮০ শতাংশ নম্বর পেলে যে অতিরিক্ত একটা ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হতো সেটিও বন্ধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি চাকরির পঞ্চম গ্রেডে মাসিক কার মেইনটেন্যান্সের ৪৫ হাজার টাকা যে ভাতা দেওয়া হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক তা দেয় না।
অন্যদিকে, দেশের ব্যাংক খাতে বর্তমানে চলমান অস্থিরতা, সুযোগ সুবিধা কমানো, ব্যাংক একীভূতকরণ, খেলাপি ঋণের রেকর্ড, ডলার ও তারল্য সংকটের কারণে আতঙ্কিত হয়ে কর্মকর্তারা চাকরি ছাড়ছেন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞদের অনেকে।
দেশের অন্য যেকোনো চাকরির মধ্যে তুলনামূলকভাবে ব্যাংকের বেতন ও সুবিধা বেশি ছিল বলে একসময় বিসিএস, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মতো চাকরি ছেড়ে অনেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আসতেন। কিন্তু এখন তার উল্টো হচ্ছে।
ক্যাটাগরিঃ অর্থনীতি
ট্যাগঃ
মন্তব্য করুন