জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় আজ শনিবার রাতেই মামলা হবে বলে জানিয়েছেন তার ভাই অপূর্ব। শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত অবন্তিকার ছোটভাই অপূর্ব মামলা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পরিবারের সকলের সাথে কথা বলে রাতেই মামলা করবেন বলে জানান তিনি।
অবন্তিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবন্তিকার যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনায় মামলা করা হবে। এতে প্রায় ১০ জনের নাম আসতে পারে।
এর আগে বিকেল ৪টার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবার পাশে তাকে দাফন করা হয়েছে অবন্তিকাকে। ফাইরুজ অবন্তিকা কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক মৃত জামাল উদ্দিন ও তাহমিনা শবনমের মেয়ে। এক বছর আগে জামাল উদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহপাঠীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে আত্মহত্যা করেছেন ফাইরুজ অবন্তিকা। শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে তাকে দাফন করা হয়।
অপূর্ব বোনের জানাজা নামাজের সময় বলেন, ‘যারা আমার আপুকে টর্চার করে হত্যা করেছে। তাদের বিচার করুন। এভাবে আমার আপুকে তারা টার্চার করলো, কিন্তু শিক্ষকের কাছে বিচার চেয়েও ও (অবন্তিকা) বাঁচলো না। এদের সবাইকে ফাঁসি দিতে হবে।’
অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনমের অভিযোগ, তার মেয়েকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকসহ প্রায় ১০/১২ জন ছাত্র গত এক দেড় বছর ধরে বিভিন্নভাবে বিরক্ত করছে। তাকে যৌন হয়রানি করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে অভিযোগ করেও বিচার পাননি।
তাহমিনা শবনম বলেন, ‘হয়রানির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষকে জানানোর পরও এর প্রতিকার হয়নি। সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী, রাফি, মাহিয়ান, লাকি, রিমি, আঁখি, বর্ণা ও শিক্ষক দ্বীন ইসলাম অবন্তিকাকে মানসিক টর্চার করত। যে কারণে সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে।’
কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি কোনোদিন কারো ক্ষতি করিনি। আজ আমার এতবড় সর্বনাশ হলো। আমার মেয়ে ভালো ছাত্রী ছিল, এটাই কী তার অপরাধ। আমার মেয়ে ডিপার্টমেন্ট ফার্স্ট ছিল, এটাই কি তার অপরাধ। গত বছর স্বামীকে হারিয়েছি। আজ মেয়েকে হারালাম। এবার ছেলেটাকে নিয়ে হয়তো নিজেও শেষ হয়ে যাবো।’
ক্যাটাগরিঃ সারাদেশ
মন্তব্য করুন